বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে ঠাকুরগাঁও-১ (সদর) আসনে দলের মহাসচিব ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এ ঘোষণা ঘিরে এলাকায় যখন জোর আলোচনা, ঠিক তখনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানবিক ও সৌজন্যমূলক একটি বার্তা প্রকাশ করে সারাব্যাপী ইতিবাচক সাড়া ফেলেছেন তারই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে সূরা সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি দেলাওয়ার হোসেন।
মঙ্গলবার সকালে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া বার্তায় দেলাওয়ার হোসেন লেখেন, “ঠাকুরগাঁওয়ের কৃতি সন্তান ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় প্রাণঢালা অভিনন্দন। ২০০১ সালের নির্বাচনে আমরা জোটের প্রার্থী হিসেবে তার পক্ষে কাজ করেছিলাম এবং তিনি বিজয়ী হয়েছিলেন। এবার আমরা দুজনেই দুই দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে আছি।”
তিনি আরও লেখেন, “প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, প্রতিযোগিতায় বিশ্বাস করি আমরা। আমাদের মূল লক্ষ্য ঠাকুরগাঁওয়ের উন্নয়ন। জনগণ আমাকে বিজয়ী করলে তাকে অভিভাবক মনে করবো। আর জনগণ যদি তাকে বিজয়ী করেন, তবে তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাবো ইনশাআল্লাহ।”
তার এই পোস্টকে রাজনৈতিক মহল ও নেটিজেনরা ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। মন্তব্যকারীরা বলছেন—পরস্পরকে সম্মান ও সহাবস্থানের এই চর্চা রাজনীতিতে নতুন ধারা সৃষ্টি করতে পারে।
জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা বেলাল উদ্দিন প্রধান বলেন, “রাজনীতি মানুষের কল্যাণের জন্য। দল–মতের ঊর্ধ্বে উঠে ঠাকুরগাঁওয়ের উন্নয়নই এখন প্রধান লক্ষ্য। মহাসচিব মির্জা ফখরুল প্রার্থী হওয়ায় আমরাও গর্ব বোধ করি। এখানে শিষ্টাচার, সম্মান ও ইতিবাচক সংস্কৃতি গড়ে উঠুক।”
এদিকে জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মো. কফিল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “রাজনীতি কখনও প্রতিহিংসার জায়গা হতে পারে না। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হোক উন্নয়নের ভাবনায়, কর্মে এবং মানবিকতায়।”
জেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, “আমাদের রাজনীতি ক্ষমতা নয়, মানুষের কল্যাণের রাজনীতি। মহাসচিব মহোদয় ঠাকুরগাঁওয়ের গর্ব। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সৌজন্যমূলক এই আচরণ রাজনীতিতে নতুন দৃষ্টান্ত।”
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান তুহিন বলেন, “রাজনীতিতে শিষ্টাচার ফিরিয়ে আনার সময় এসেছে। প্রতিদ্বন্দ্বীতায় যদি সম্মান, সততা ও উন্নয়ন চিন্তা থাকে, দেশ-সমাজ আরও আলোকিত হবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিবেশে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের এমন মানবিক বক্তব্য আগামী রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তা বইয়ে আনতে পারে।